নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচটা ১-০ গোলে পিছিয়ে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কা তখন জেঁকে বসেছে। কিন্তু যোগ হওয়া ৬ মিনিটের শুরুতেই গোল শোধ করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র করে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ওঠার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে সাফ চ্যাম্পিয়নরা।
ঠিক দুই বছর আগে একই টুর্নামেন্টে পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। অথচ রোববার পাকিস্তানের কাছ থেকে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে লাল-সবুজদের। ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা চললেও বাংলাদেশ দলের ডিফেন্ডারের ভুলে প্রথমে গোল পায় পাকিস্তানই। ৩১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে লং পাস ঠিক মতো রিসিভ করতে পারেননি বাংলাদেশের ডিফেন্ডার শিউলি আজিম। এতে পাকিস্তানী ফরোয়ার্ড জাহমেনা মালিক বল পেয়ে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রূপনা চাকমাকে পরাস্ত করেন (১-০)। পিছিয়ে পড়ে গোল শোধে মরিয়া হয়ে লড়লেও প্রথমার্ধে সমতায় ফেরতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচে ৪৩ মিনিটে ঋতুপর্ণা চাকমার জোরালো শট পাকিস্তানের ক্রসবারে লেগে ফেরত আসলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে লড়াই করে সাবিনা বাহিনী। একাধিকবার গোলের সুযোগ তৈরি করেও সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। ফিনিশিং ব্যর্থতায় সেই অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয়। বাংলাদেশের বৃটিশ কোচ পিটার বাটলার দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক পরিবর্তন আনেন দলে। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের পরিবর্তে কৃষ্ণা রানী সরকারকে মাঠে নামান তিনি। তহুরা খাতুন কাল ফরোয়ার্ড লাইনে ছিলেন পুরোই নিষ্প্রভ। কয়েকটি পরিবর্তন করেও তেমন ফল আসছিল না। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে এগিয়ে ছিল পাকিস্তানই। তবে চতুর্থ রেফারি ৬ মিনিট যোগকরা সময় দেন। এতেই মান বাঁচে বাংলাদেশের মেয়েদের। পাশাপাশি টুর্নামেন্টে টিকে থাকার সুযোগও মেলে। যোগকরা সময়ের
প্রথম মিনিটেই (৯০+১ মিনিট) বাম প্রান্ত থেকে ঋতুপর্ণা চাকমার ক্রসে জটলার মধ্যে হেডে গোল করেন শামসুন্নাহার (১-১)। এই গোলে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে বাংলাদেশ দল। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ দিয়েছে পাকিস্তানই। ৭২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল পাকিস্তান। বাংলাদেশ গোলরক্ষক রূপনা চাকমাকে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেনি তারা। উল্টো গোলরক্ষককে আঘাত করে হলুদ কার্ড দেখেছেন পাকিস্তানী ফরোয়ার্ড। এ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো বাংলাদেশ ও ভারতের। তবে ম্যাচটি ড্র হওয়ায় এখন তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দিকে। ২৩ অক্টোবরের ঐ ম্যাচ ড্র হলে বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে খেলবে শেষ চারে। ভারতের কাছে হারলেও সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের। সেক্ষেত্রে গোল ব্যবধানে নির্ধারণ হবে গ্রুপ রানার্সআপ। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান ৫-২ গোলে হেরেছিল ভারতের বিপক্ষে।